নির্বাচনে বিজয়ী হলেও টাকা দিয়ে ভোট কেনায় চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদকের পদ হারালেন চিত্রনায়ক জায়েদ খান। নানা ঘটনার পর শনিবার তার প্রার্থিতা বাতিল করে সাধারণ সম্পাদক পদে পরাজিত প্রার্থী চিত্রনায়িকা নিপুণ আক্তারকে সমিতির সাধারণ সম্পাদক ঘোষণা করা হয়েছে।




এই নির্বাচন পরিচালনায় গঠিত আপিল বোর্ডের সভার পর বোর্ডের প্রধান চলচ্চিত্র নির্মাতা সোহানুর রহমান সোহান এই ঘোষণা দেন।তিনি বলেন, জায়েদের প্রার্থিতা বাতিল হওয়ায় সাধারণ সম্পাদক পদে তার নিকটতম প্রার্থী নিপুণকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিজয়ী ঘোষণা করা হল।




একই অভিযোগে কার্যনির্বাহী পরিষদের সদস্য পদে নির্বাচিত চুন্নুর প্রার্থিতাও বাতিল করা হয়েছে বলে জানান তিনি।আপিল বোর্ডের সামনে শনিবার হাজির ছিলেন নিপুণ। তবে জায়েদ খান আসেননি। আর তার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করেছিল সমিতির সদস্যপদ না পাওয়া শিল্পীরা।




গত ২৮ জানুয়ারি ভোটের পর নিপুণ অর্থ দিয়ে ভোট কেনার অভিযোগ তুললেও জায়েদ তা প্রত্যাখ্যান করেছিলেন।নিপুণ সাংবাদিকদের বলেন, “আমার কাছে অনেক ডকুমেন্টস ছিল। জানুয়ারির ২৮ তারিখ থেকে আমি নির্বাচন কমিশনকে সব বিষয় জানিয়েছি, কিন্তু আমাকে হেল্প করে নাই। এবার সত্যের জয় হয়েছে। আমার জন্য সবাই দোয়া করবেন।”




আপিল বোর্ডের সিদ্ধান্তের ফলে এখন শিল্পী সমিতিতে শীর্ষ পদে দুজনই একই প্যানেলের হলেন। নিপুণের এই প্যানেল থেকে সভাপতি পদে নির্বাচিত হয়েছেন চিত্রনায়ক ইলিয়াস কাঞ্চন।




শিল্পী সমিতির নির্বাচনে গত দুই বার জয়ী মিশা সওদাগর-জায়েদ খান প্যানেলকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে ইলিয়াস কাঞ্চন ও নিপুণের নেতৃত্বে প্যানেল হয়েছিল।




গত ২৮ জানুয়ারি ভোটগ্রহণের পরদিন ঘোষিত ফলে সভাপতি পদে ইলিয়াস কাঞ্চনকে এবং সাধারণ সম্পাদক পদে জায়েদকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়।




ঘোষিত ফলে দেখা যায়, জায়েদ খান হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের পর ১৩ ভোটে হারিয়েছেন নিপুণকে। নির্বাচনের সময়ই টাকা দিয়ে ভোট কেনার অভিযোগ করেছিলেন নিপুণ। তাতে সাড়া না পেয়ে তিনি আপিল করেন।




তার আপিলে ভোট পুনর্গণনা হলেও তাতে ফল একই থাকলে নিপুণ সংবাদ সম্মেলন করে সাধারণ সম্পাদক পদে পুনঃভোটের দাবি তোলেন।সেখানে তিনি অর্থ দিয়ে ভোট কেনার অভিযোগ তুলে জায়েদ খানের বিরুদ্ধে আদালতে যাওয়ার হুমকিও দেন।




পরে নির্বাচনী আপিল বোর্ডে জায়েদ খান ও কার্যকরী পরিষদের সদস্য চুন্নুর পদ বাতিলের আবেদন করেন তিনি।তার আবেদনে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ে করণীয় জানতে আবেদন করেছিলেন আপিল বোর্ডের চেয়ারম্যান সোহান।




মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো এক চিঠিতে আপিল বোর্ডকেই এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হলে শনিবার দুই পক্ষকে নিয়ে বসার উদ্যোগ নেন সোহান।




তবে বৈঠকে যাবেন না বলে আগেই জানিয়ে দেন গত দুই বারের সম্পাদক জায়েদ খান; তিনি বলেন, “২৯ জানুয়ারির পর থেকে আপিল বোর্ড বিলুপ্ত হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে আপিল বোর্ডের সিদ্ধান্ত নেওয়ার কোনো এখতিয়ার নেই।“




বিষয়টি নিয়ে আপিল বোর্ডের চেয়ারম্যান সোহানসহ পাঁচজনের নামে আইনি নোটিস পাঠিয়েছেন জানিয়ে জায়েদ খান বলেছেন, তিনি মামলা করবেন।