



এবারের জিম্বাবুয়ে সফরে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের প্রধান প্রতিপক্ষ কে? চোখ বন্ধ করে যে কেউ বলে দেবে পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত সিকান্দার রাজার নাম। টি-টোয়েন্টি সিরিজে ব্যাট হাতে ছিলেন খুবই আক্রমণাত্মক।




ধারাবাহিকতা ধরে রেখে ওয়ানডে সিরিজেও বাংলাদেশের সামনে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করেছেন এক দুর্দমনীয় ব্যাটার হিসেবে। টানা দুই ম্যাচে দুটি ম্যাচজয়ী সেঞ্চুরি ইনিংসে দলকে দিয়েছেন ঐতিহাসিক সিরিজ জয়ের উৎসব।




তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজের প্রথমটি জিতে ১-০তে এগিয়ে ছিল জিম্বাবুয়ে। গতকাল দ্বিতীয় ম্যাচের ৫ উইকেটের জয়ে সিরিজ নিশ্চিত করল চাকাবভার দল।




প্রথমে ব্যাটিং করে বাংলাদেশ দল মাহমুদুল্লাহর ৮০ রানে ভর করে ৯ উইকেটে ২৯০ রান সংগ্রহ করে। সিকান্দার রাজা-রেজিস চাকাবভার ব্যাটিং নৈপুণ্যে ১৫ বল হাতে রেখেই জয় নিশ্চিত করে জিম্বাবুয়ে।




সেই সাথে তিন ম্যাচ সিরিজও ২-০তে নিশ্চিত করল জিম্বাবুয়ে। ২৯১ রানের লক্ষ্যে খেলতে নামা জিম্বাবুয়ে ৪৭.৩ ওভারে ২৯১ করে ৫ উইকেটের জয় নিশ্চিত করে।




জিম্বাবুয়ে অলরাউন্ডার সিকান্দার রাজা দুর্দান্ত ফর্মে রয়েছেন। বাংলাদেশের বিপক্ষে প্রথম ওয়ানডেতে করেন ম্যাচ উইনিং অপরাজিত ১৩৫ রান। প্রথম ম্যাচের ইনোসেন্ট কাইয়াকে নিয়ে বাংলাদেশী বোলারদের ওপর তাণ্ডব চালান রাজা।




সেঞ্চুরি করেন কাইয়া। দ্বিতীয় ম্যাচে রাজা সঙ্গী হিসেবে পান অধিনায়ক চাকাবভাকে। চাকাবভা ৭৫ বলে ১০২ রান করে আউট হলেও অবিচল ছিলেন রাজা। এ ম্যাচেও সিকান্দার রাজা ১১৭ রানে অপরাজিত থাকেন।




১২৭ বলের এই ইনিংসে আটটি চার ও চারটি ছক্কার মার ছিল। জিম্বাবুয়েকে চেপে ধরেছিল বাংলাদেশ। ১৪ ওভার ১ বলে ৪ উইকেট। দলীয় স্কোর তখন ৫৪। গত ম্যাচের মতো এই ম্যাচেও রাজাকে আগে সাজঘরে ফেরানোর সুবর্ণ সুযোগ হাতছাড়া করেছে বাংলাদেশ।




রানআউটের সুযোগ মিস করেছেন মেহেদী হাসান মিরাজ। ২৫.২ ওভারে বল করছিলেন মিরাজ। অযথা রান নিতে গেলে রানআউটের দ্বারপ্রান্তেই ছিলেন রাজা।




কিন্তু নন স্ট্রাইকে মিরাজের বোকামিতে জীবন পেয়ে যান জিম্বাবুয়ের এই ম্যাচ জেতানো তারকা। রিপ্লেতে দেখা, মিরাজ যে হাতে বল নিলেন, সেই হাতে স্টাম্প না ভেঙে ভাঙলেন অন্য হাতে।




রাজা তখন ৪২ রানে ব্যাট করছিলেন। নতুন জীবন পেলেন রাজা। গত ম্যাচে ঠিক এমনই সময়ে রাজাকে আউটের সুযোগ মিস করে বাংলাদেশ। জীবন পেয়ে ছক্কা হাঁকিয়ে ক্যারিয়ারের ২১তম ফিফটিও পূর্ণ করেন।




শেষ পর্যন্ত বাজে ফিল্ডিংয়ের খেসারত দিতে হলো। বাংলাদেশী বোলারদের মধ্যে হাসান মাহমুদ ২টি ও মেহেদী হাসান মিরাজ ২টি উইকেট নেন। ম্যান অব দ্য ম্যাচ নির্বাচিত হন সিকান্দার রাজা।
দ্বিতীয় ওয়ানডেতে ৫ উইকেটের পরাজয়ে ৯ বছর পর জিম্বাবুয়ের কাছে ওয়ানডে সিরিজ হারের লজ্জায় ডুবল তামিম ইকবালের দল। সর্বশেষ বাংলাদেশ ২০১৩ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজ হেরেছিল।
রাজা বলেন, “হারের বৃত্ত ভেঙে সিরিজ জিতে খুব ভালো লাগছে। গত নয় (৯) বছরে আমরা বাংলাদেশকে হারাতে পারিনি। তারা ১৯-০ ব্যবধানে এগিয়ে ছিল।
সঠিক সময়েই আমরা জয়গুলো পেয়েছি। ভারত আসছে (জিম্বাবুয়ে সফরে)। তারপর আমরা অস্ট্রেলিয়ায় যাব। সামনে বিশ্বকাপও আছে। জিম্বাবুয়ের জন্য ভালো সময় এটা।”
বাংলাদেশকে তারা মোটেও অসম্মান করেন না বলেও জানান রাজা, “আমরা এটা অস্বীকার করতে পারি না যে বাংলাদেশ একটা বড় ক্রিকেট দল।
বিশ্বকাপ সুপার লিগের পয়েন্ট টেবিলে তারা প্রথম বা দ্বিতীয় স্থানে আছে। তারা ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ২-১ এ (আসলে ৩-০) সিরিজ হারিয়েছে। আমি মোটেই বাংলাদেশকে অসম্মান করতে রাজি না। তারা শক্তিশালী দল।”