



দুই দেশের যুব দলের ম্যাচ হলেও উত্তাপ পাওয়া যাচ্ছিল ভালোই। কখনো কখনো মনে হচ্ছিল মাঠে খেলছে বাংলাদেশ-ভারত জাতীয় দল। ভারতের ভূবনেশ্বরের কলিঙ্গ স্টেডিয়ামের উপস্থিত কিছু স্থানীয় সমর্থক ভুভুজেলা বাজিয়ে উৎসাহ দিচ্ছিল স্বাগতিক দলকে।




কিন্তু তাতে কাজ হয়নি। দুই প্রতিবেশীর লড়াইয়ে আজ ভারতকে ২-১ গোলে হারিয়ে দারুণ এক জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। জোড়া গোল করে বাংলাদেশের জয়ের নায়ক পিয়াস আহমেদ।




গত ম্যাচের জয়ের নায়ক মিরাজুল ইসলামকে আজ মাঠেই নামাননি বাংলাদেশ কোচ পল স্মলি। আসলে মিরাজুলকে বদলি নামানোর প্রয়োজনই হয়নি। দ্বিতীয়ার্ধের পুরোটা সময় ভারতকে আটকে রেখে প্রত্যাশিত জয়টা তুলে নিয়েছে বাংলাদেশ।




প্রথম ম্যাচে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ১-০ গোলে জয়। দ্বিতীয় ম্যাচে ভারতকে হারিয়ে সাফ অনূর্ধ্ব-২০ ফুটবলের ফাইনালের আশা উজ্জ্বল করেছে বাংলাদেশের যুবারা।




৫ দেশের রাউন্ড রবিন লিগ পদ্ধতির এই টুর্নামেন্টে বাংলাদেশের পরের ম্যাচ ২৯ জুলাই মালদ্বীপের সঙ্গে। ৫ দল ৪টি করে ম্যাচ খেলার সর্বোচ্চ পয়েন্ট পাওয়া দুটি দল খেলবে ফাইনালে। বাংলাদেশের শেষ লিগ ম্যাচ নেপালের সঙ্গে।




২ ম্যাচে বাংলাদেশের পয়েন্ট ৬। মালদ্বীপকে ৪-০ গোলে উড়িয়ে শুরু করা নেপালের পয়েন্ট ৩। সাফ যুব ফুটবলে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ভারত এক ম্যাচ খেলে পয়েন্ট-শূন্য।




আজ আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণে উপভোগ্য ম্যাচই খেলেছে দুই দল। বাংলাদেশের যুবারা মাঠে নেমেছিলেন জয়ের আশায়। ভারতকে কখনোই তারা প্রাধান্য বিস্তার করতে দেয়নি। নিজেরা বরং মাঠ বড় করে খেলেছে। আক্রমণ তৈরি করে চাপে ফেলেছে ভারতকে।




শুরুতেই বাংলাদেশ দলের ‘নাম্বার নাইন’ বসুন্ধরা কিংসের তরুণ প্রতিভা পিয়াস আহমেদ দারুণভাবে বল তুলে দিয়েছিলেন ভারতীয় গোলকিপারের মাথার ওপর দিয়ে।




দুর্ভাগ্যক্রমে বল লাগল সাইডপোস্টে। এর পরপরই মইনুল ইসলামের হেড লাগে ক্রসবারে। ভারত কিছুটা গুছিয়ে উঠে পাল্টা আক্রমণে এসেছে। গোলের সুযোগ তৈরি করেছে তারাও।




তবে প্রথমে গোল করে এগিয়ে যায় বাংলাদেশই। ২৮ মিনিটে বাংলাদেশ দলের পিয়াস আহমেদ ১-০ করেন। বাংলাদেশের সীমানা থেকে লম্বা বল আসে ভারতের বক্সের ওপর। ভারতের রক্ষণ বল ক্লিয়ার করতে পারেনি।




পিয়াস নিজের বল নিয়ে ঢোকেন। এক খেলোয়াড়কে কাটিয়ে কোনাকুনি চলে যান। তারপর বাঁ পায়ের কোনাকুনি প্লেসিং। এর পরপরই ক্রস থেকে মইনুল ইসলামের হেড অল্পের জন্য চলে যায় বাইরে।




৩৫ মিনিটে ভারত সমতা ফেরায়। ফ্রি কিক থেকে বক্সে উড়ে আসে বল। ডিফেন্ডারদের মাঝখানে লুকিয়ে থাকা গুরকিরাত সিংয়ের হেডে বল চলে যায় জালে । তবে বিরতির ঠিক আগে বাংলাদেশ এগিয়ে যায় আবার।




পেনাল্টিতে ২-১ করেন পিয়াস আহমেদ। বিরতির পর ম্যাচে ফেরার চেষ্টা করেও আর গোল পায়নি ভারত। সেই হতাশা থেকেই কি না দুবার ভারতের খেলোয়াড়েরা মেজাজ হারিয়ে বসেছিলেন। তা নিয়ে দুই দল ধাক্কাধাক্কিতে জড়ায় দুবার।




আর সেটিই যেন বলে দিচ্ছিল মাঠে লড়ছে ভারত-বাংলাদেশ। সেই লড়াইয়ে বাংলাদেশের জয়ের পর টিভি পর্দায় দেখা গেল গ্যালারিতে বাংলাদেশের পতাকা হাতে ৭-৮ জন সমর্থক আনন্দ করছেন।