



কপাল! ওই তিন আঙুলেই লেখা থাকে সবটা। ভাগ্যের এমনই পরিহাস যে, শ্রীলঙ্কার প্রাক্তন ক্রিকেটারকে এখন বাস চালাতে হচ্ছে দিন যাপনের জন্য।




অথচ ১০ বছর আগেও তিনি ভাবেননি যে, এমন দিন দেখতে হবে। ২০১১ বিশ্বকাপেও খেলেছেন তিনি। যখন আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পা রাখেন, তখন তাকে শ্রীলংকান ক্রিকেটের ভবিষ্যৎ বলা হত।




এমনকি আইপিএলে খেলেছেন মহেন্দ্র সিংহ ধোনির সঙ্গে চেন্নাই সুপার কিংসের হয়ে; কিন্তু মাত্র সাত বছরেই শেষ হয়ে যায় তার ক্রিকেটজীবন।




সংসার টানতে এখন অস্ট্রেলিয়ায় বাস চালান শ্রীলংকার সেই সাবেক স্পিনার সুরাজ রনদিভ। ডানহাতি অফ স্পিনার রনদিভের আন্তর্জাতিক অভিষেক হয় ২০০৯ সালে।




মুত্তিয়া মুরালিধরণ তখন ক্যারিয়ারের শেষ লগ্নে। যে কারণে রনদিভের ওপর বাজি ধরেছিলেন অরবিন্দ ডি সিলভা, অর্জুনা রাণাতুঙ্গার মতো সাবেক ক্রিকেটাররা।




কিন্তু চোটে পড়ে তার ক্যারিয়ারে বারবার বাধা পড়েছে। ২০১৬ সালে মাত্র ৩১ বছর বয়সে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর নিতে বাধ্য হন তিনি।




খেলা ছাড়ার পর আর ক্রিকেটের সঙ্গে সম্পর্ক রাখেননি রনদিভ। দেশ ছেড়ে পরিবার নিয়ে চলে যান অস্ট্রেলিয়ায়। সেখানে বাস চালান তিনি।




এক সময় যে হাতের ভেল্কি বুঝতে না পেরে আউট হয়েছেন বড় বড় ব্যাটাররা, সেই হাতই এখন সামলায় স্টিয়ারিং হুইল।
শুধু রনদিভই নয়, অস্ট্রেলিয়ায় বাস চালানোর কাজ বেছে নিয়েছেন আরও দুই ক্রিকেটার।




তারা হলেন আরেক শ্রীলঙ্কান চিন্থাকা জয়সুরিয়া এবং জিম্বাবুয়ে ক্রিকেটার ওয়াডিংটন মাওয়ায়েঙ্গা। অস্ট্রেলিয়ায় রুটি-রুজির জন্য এক সময় পেশাদার ক্রিকেটার হওয়া সত্ত্বেও ভিন্ন পেসা বেছে নিতে হয়েছে তাদের।




রনদিভসহ এই তিন ক্রিকেটার কাজ করেন ট্রান্সডেভ নামে একটি কোম্পানিতে। যারা অস্ট্রেলিয়াজুড়ে প্রায় ১২০০ ড্রাইভার সাপ্লাই দিয়েছেন বাস চালানোর জন্য।




সুরাজ রনদিভকে ২০১১ সালে আইপিএলে মহেন্দ্র সিং ধোনির দল চেন্নাই সুপার কিংস কিনেছিল। ধোনির সঙ্গে আটটি ম্যাচ খেলেছিলেন রনদিভ।




নিয়েছিলেন ৬ উইকেট। পরের বছর তাকে আর ধরে রাখেনি চেন্নাই। এমনকি এরপর আর আইপিএলেও সুযোগ মেলেনি তার।




শ্রীলঙ্কার হয়ে সাত বছরে ১২টি টেস্ট, ৩১টি এক দিনের ম্যাচ ও ১৭টি টি-টোয়েন্টি খেলেছেন রনদিভ। টেস্টে ৪৩, এক দিনের ক্রিকেটে ৩৬ ও টি-টোয়েন্টিটে ৭টি উইকেট নিয়েছেন তিনি।




২০১১ সালের বিশ্বকাপে শ্রীলঙ্কা দলে অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউজের পরিবর্তিত হিসাবে সুযোগ পেয়েছিলেন রনদিভ। ভারতের বিরুদ্ধে ফাইনালেও খেলেছিলেন তিনি। যদিও উইকেট পাননি।