বাংলাদেশকে তাদের নিজেদের ওষুধেরই তিক্ত স্বাদ দিচ্ছে শ্রীলঙ্কা। প্রথম ইনিংসে মাত্র ২৪ রানে ৫ উইকেট হারানোর পর ষষ্ঠ উইকেটে ২৭২ রানের জুটি গড়েছিল স্বাগতিকরা। জবাবে খেলতে নেমে শ্রীলঙ্কাও ষষ্ঠ উইকেটে গড়েছে বড় জুটি। জোড়া সেঞ্চুরিতে এগোচ্ছে বড় লিডের পথে।




মিরপুর টেস্টের চতুর্থ দিনের দ্বিতীয় সেশন শেষে শ্রীলঙ্কার সংগ্রহ ৫ উইকেটে ৪৫৯ রান। এরই মধ্যে তাদের লিড দাঁড়িয়েছে ৯৬ রান। অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউজ ১২৩ ও দিনেশ চান্দিমাল ১২০ রানে অপরাজিত রয়েছেন। এ দুজনের অবিছিন্ন ষষ্ঠ উইকেট জুটির সংগ্রহ ১৯৩ রান।




আগেরদিন ৫ উইকেটে ২৮২ রান নিয়ে খেলা শেষ করেছিল শ্রীলঙ্কা। বৃষ্টির কারণে তৃতীয় দিন প্রায় তিন ঘণ্টা নষ্ট হওয়ায়, আজ ত্রিশ মিনিট আগে শুরু হয়েছে খেলা। দিনের প্রথম বলটিই পায়ের ওপর করেন এবাদত হোসেন। যেখান থেকে দুই রান নিয়ে নেন চান্দিমাল।




এমন শুরুর আর তেমনভাবে দুই অভিজ্ঞ লঙ্কানের ওপর চাপ প্রয়োগ করতে পারেনি বাংলাদেশের বোলাররা। সাকিব আল হাসান ও তাইজুল ইসলামের বলে বিচ্ছিন্ন কিছু আবেদন হলেও উইকেট তোলার মতো বোলিং করতে পারেননি তারা। ফলে অনায়াসেই কেটেছে লঙ্কানদের প্রথম ঘণ্টা।




পানি পানের বিরতির পর আক্রমণে আসেন খোদ অধিনায়ক মুমিনুল হক। সেই ওভারেই চতুর্থ বলে পরাস্ত হন চান্দিমাল। বল জমা পড়ে লিটন দাসের গ্লাভসে। বোলার-ফিল্ডারদের জোরালো আবেদনে সাড়া দেন আম্পায়ারও। কিন্তু চান্দিমাল রিভিউ নিলে দেখা যায় ব্যাটে লাগেনি সেই বল। ফলে মেলেনি উইকেট।




পরের ওভারে চান্দিমালের বিপক্ষে স্ট্যাম্পিংয়ের সুযোগ তৈরি করেছিলেন তাইজুল ইসলাম। রিপ্লে’তে এক পাশ থেকে মনে হচ্ছিল দাগের ভেতরে চান্দিমালের পায়ের কোনো অংশ নেই। তবে অন্য পাশ থেকে যায়, অল্পের জন্য পপিং ক্রিজের ভেতরেই রয়ে গেছেন চান্দিমাল। আবারও আশাহত হয় বাংলাদেশ।




এর বাইরে তেমন একটা সুযোগ তৈরি করতে পারেনি বাংলাদেশের বোলার-ফিল্ডাররা। চান্দিমাল ও ম্যাথিউজ মিলে খুব সহজেই কাটিয়ে দিয়েছেন পুরো সেশন। চান্দিমাল নিজের ফিফটি তুলে নিলেও, সেঞ্চুরির অপেক্ষা নিয়েই বিরতিতে যেতে হয়েছে ম্যাথিউজকে। পরে দ্বিতীয় সেশনে কাছাকাছি সময়েই সেঞ্চুরি করেন এ দুই ব্যাটার।




অবশ্য মধ্যাহ্ন বিরতির পর নেমে দ্বিতীয় ওভারেই খানিক উল্লাসের উপলক্ষ্য পেয়েছিল বাংলাদেশ। খালেদের করা সেই ওভারের শেষ বলটিতে ম্যাথিউজকে কট বিহাইন্ড আউট দেন আম্পায়ার জোয়েল উইলসন। তবে সঙ্গে সঙ্গে রিভিউ নিয়ে নিজের উইকেট বাঁচিয়ে নেন ম্যাথিউজ।




এর খানিক পরই ক্যারিয়ারের ১৩তম সেঞ্চুরি পূরণ করেন লঙ্কানদের এ সাবেক অধিনায়ক। সেঞ্চুরি ছোঁয়ার পর আবারও উইলসনের ভুল আউটের শিকার হন ম্যাথিউজ। মোসাদ্দেক হোসেনের করা ইনিংসের ১৪৪তম ওভারে লেগ বিফোর আউট দেন আম্পায়ার। এবারও রিভিউ নিয়ে নিজের উইকেট বাঁচান ম্যাথিউজ।




সংগ্রামী ব্যাটিংয়ে সেঞ্চুরি করতে ২৭৪ বল খেলেন ম্যাথিউজ। প্রায় সোয়া সাত ঘণ্টার ইনিংসে ছয়টি চার ও দুইটি ছক্কা হাঁকান তিনি। অন্যদিকে শুরু থেকেই সাবলীল খেলতে থাকা চান্দিমাল সেঞ্চুরি করতে খেলেন ১৮১ বল। যেখানে ছিল নয় চারের সঙ্গে একটি ছয়ের মার।




অবাক করার বিষয় হলো, চান্দিমাল যখন ফিফটি পূরণ করেছিলেন, তখন ম্যাথিউজের নামের পাশে ছিল ৮৮ রান। সেখান থেকে চা পানের বিরতিতে যাওয়ার আগে ম্যাথিউজ অপরাজিত রয়েছেন ১২৩ রানে। তিনি ৩৫ রান করতেই আরও ৭০ রান নিয়েছেন চান্দিমাল। সেশন শেষে তিনি ১২০ রানে অপরাজিত।