বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডে এখনো যেন ঈদের ছুটি কাটেনি। গত বৃহস্পতিবার থেকে কর্মযজ্ঞ শুরু হলেও আজ শনিবার বেড়েছে ব্যস্ততা। বোর্ডে ফিরছেন পরিচালকরা, ছুটি কাটিয়ে শ্রীলঙ্কা সিরিজের ক্যাম্প যোগ দিতে অ্যাকাডেমি ভবনে একে একে জড়ো হচ্ছেন খেলোয়াড়রা।




এমন ফুরফুরে দিনেই কিনা রীতিমত রুদ্রমূর্তি ধারণ করলেন বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের টিম ডিরেক্টর খালেদ মাহমুদ সুজন। মুস্তাফিজুর রহমানকে টেস্ট খেলার আহ্বান জানালেন তিনি।




মুস্তাফিজ সাকিব আল হাসান, তামিম ইকবাল কিংবা মুশফিকুর রহিমদের মতো বয়সে পৌঁছাননি, সেটা মনে করিয়ে দিয়ে সুজন বললেন, ‘পাপন ভাই বলেছিলেন খেলোয়াড়রা যে ফরম্যাট খেলতে চায় এ নিয়ে আলাপ করতে পারে।




সেটা সিনিয়র খেলোয়াড়দের ক্ষেত্রে কথাটা বলেছেন, সবার ক্ষেত্রে না। এখন যদি জয় বলে আমি ওয়ানডে খেলব আর টেস্ট খেলব না, এটা কি ঠিক হল নাকি? মুস্তাফিজের আসলে বয়স কত?




কয়দিন ধরে খেলে? ও তো সাকিব না, তামিম না, মাশরাফি বা মুশফিক না, যারা এত বছর ধরে বাংলাদেশকে তিন ফরম্যাটে সার্ভিস দিয়েছে। দেশের জন্য খেলা জরুরী।’




মুস্তাফিজের প্রতি তাই সুজনের আহ্বান- টাকার চেয়েও দেশ বড়। বর্তমানে ক্রিকেটাররা জাতীয় দলে খেলে মোটা অঙ্কের পারিশ্রমিক পান। সাবেক ক্রিকেটারদের ক্ষেত্রে টাকা অঙ্ক ছিল নগণ্য।




সেদিকে ইঙ্গিত করে দেশের ক্রিকেটের জনপ্রিয় এই সংগঠক ও কোচ বলেন, ‘সাদা বলে হয়ত টাকার ব্যাপারটা বেশি। আইপিএল খেললে হয়ত ২-৪ কোটি টাকা পাব। ক্রিকেট কি টাকার চেয়ে বড় নয়?




দেশ কি টাকার চেয়ে বড় নয়? আমরা তো টাকার জন্য খেলিনি। একজন ক্রিকেটারকে এখন মৃত্যুর সময় বিসিবির সহায়তা লাগে। ওদের তো লাগবে না। ওরা বরং অন্যদের সহায়তা করতে পারে। দেশের জন্য কেন আমি খেলব না?’




সঙ্গে যোগ করেন সুজন, ‘সাকিব-তামিমদের বয়স ৩৪-৩৫ বছর। তাদের এখন বিরতি প্রয়োজন, তারা এটার যোগ্য। কিন্তু লিটন দাস তো বিশ্রামের যোগ্য না।




লিটন যদি সাকিব-তামিম হত, বলতাম সেও বিশ্রামের যোগ্য। মুস্তাফিজের অবশ্যই টেস্ট খেলা উচিৎ। এখন তার পিক টাইম। আমরা তো বলছি না সব টেস্ট খেলো। আমি চাই বছর ৬-৮টা টেস্ট ম্যাচ বছরে তার খেলা উচিৎ।’




সুজনের এমন অগ্নিমূর্তি হওয়ার কারণ মুস্তাফিজের টেস্ট খেলা প্রসঙ্গে। কিছুদিন আগে ক্রিকেট ক্যারিয়ার দীর্ঘ করতে হার্ডলাইনে মুস্তাফিজ এক সাক্ষাৎকারে ইঙ্গিত দিয়েছেন, টেস্ট ক্রিকেট আর চালিয়ে যেতে চান না তিনি।




এমনকি বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের দেওয়া চুক্তিপত্রে মুস্তাফিজ লিখেছেন, টেস্টে পাওয়া যাবে না তাকে। সুজন জানালেন, সেই চুক্তিপত্র সকল ক্রিকেটারদের জন্য নয়, এমন সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন কেবল সিনিয়ররা।




মুস্তাফিজকে টেস্ট খেলাত আহ্বান জানালেন সুজন, ‘আমি তো চাই মুস্তাফিজ টেস্ট খেলুক। কেন না? আমাদের তো এত বোলার নেই। হাতে গুনলে এবাদত, তাসকিন, শরিফুল, খালেদ, রাহী… এরপর বোলার কই?




বাংলাদেশের সেরা ফাস্ট বোলারই তো মুস্তাফিজ। অভিজ্ঞতা বলুন, নৈপুণ্য বলুন, টেকনিক-ট্যাকটিকস বলুন। এসব দিক থেকে তো মুস্তাফিজই সেরা। মুস্তাফিজ থাকলে আমরা ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে খেলাতে পারতাম। এখন এত খেলা, তিন ফরম্যাটে খেলা কঠিন সবাইকে বিশ্রাম দিতে হবে।’