ইউরোপের ২৭ দেশের নেতাদের সাথে কথা বলে কোনো সাড়া পেলেন না ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভোলদিমের জেলেনস্কি। রুশ আগ্রাসনের মুখে সামরিকভাবে অনেকটা একা লড়াই করতে হচ্ছে তাকে।
তিনি বলেন, কারও কাছ থেকে তিনি সহায়তা চেয়ে পাননি। তবে, তিনি রাশিয়াকে ভয় পান না। নিউইয়র্ক টাইমসের খবর। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভোলদিমের জেলেনস্কি বলেন,
ইউরোপীয় ইউনিয়নের ২৭ দেশের প্রতিটির রাষ্ট্রপ্রধানের সাথে আমার ফোনালাপ হয়েছে। আমি তাদের জিজ্ঞেস করেছি, তারা ইউক্রেনকে ন্যাটোর অন্তর্ভুক্ত করবেন কিনা।
কিন্তু ইইউ নেতারা সদুত্তর দিতে ভয় পাচ্ছেন। এ বিষয়ে কোনো নিশ্চয়তাও কোনো নেতা দেননি। তবে আমরা ভয় পাইনি, আমরা শেষ পর্যন্ত লড়াই করে যাবো।
রাশিয়ার সামরিক মহড়া যে শুধুই লোক দেখানো ছিল না, সে জবাব মিলেছে বৃহস্পতিবারের আক্রমণেই। জল, স্থল আর আকাশ, ত্রিমুখী আক্রমণে এখন প্রকম্পিত ইউক্রেন।
খোদ রাজধানী কিয়েভে হামলার পরও যেন রীতিমতো অসহায় দেশটি। ইউক্রেনের বড় অংশ জুড়েই রাশিয়ার সীমান্ত। ভৌগোলিকভাবে এই সুবিধাই নিয়েছে মস্কো। উত্তর, পূর্ব এবং দক্ষিণ, তিন দিক থেকেই রুশ সেনারা প্রবেশ করেছে ইউক্রেন ভূখণ্ডে।
বিমান হামলা হয়েছে প্রায় সব বড় শহরেই। রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ইগর কোনাশেনকোভ বলেন, দোনেৎস্ক এবং লুহানস্ক থেকে আমাদের পদাতিক বাহিনী অগ্রসর হয় ইউক্রেনের দিকে।
দোনবাস শহরে শান্তিপূর্ণ অবস্থা থাকলেও সেখানে গোলাবর্ষণ শুরু করে ইউক্রেনে সামরিক বাহিনী। সিভারস্কি নদী পার হবার পর আমাদের সামরিক বাহিনী পাল্টা জবাব দেয়।
সীমান্তের নানা প্রান্তে রুশ সাঁড়াশি হামলা সামাল দেয়াই নয়, ইউক্রেনের দুশ্চিন্তা আছে প্রতিবেশী বেলারুশ নিয়েও। মস্কোর ঘনিষ্ঠ মিত্র বেলারুশ তাদের ভূখণ্ড উন্মুক্ত করে রেখেছে রুশ বাহিনীর জন্য।
বেলারুশ প্রেসিডেন্ট আলেকজান্ডার লুকাশেঙ্কো বলেন, এখনও বেলারুশ সামরিক বাহিনী ইউক্রেনে চালানো অভিযানে অংশ নেয়নি। তবে আমরা প্রস্তুত।
প্রয়োজন হলেই বেলারুশের সামরিক বাহিনী অভিযানে অংশ নেবে। এর পাশাপাশি ইউক্রেনে অভিযান চালাতে আমাদের ভূখণ্ডও ব্যবহার করতে পারবে রাশিয়া।
পুরো ঘটনাপ্রবাহে সামরিকভাবে চুপ থাকলেও গত এক মাস ধরেই ইউক্রেনের প্রতিবেশী দেশগুলোতে শক্তি বাড়িয়েছে ন্যাটো এবং যুক্তরাষ্ট্র। অথচ, রুশ হামলা শুরুর পর ন্যাটো বলছে, ইউক্রেনে কোনো সেনা পাঠাবে না তারা।
ন্যাটো মহাসচিব জেন্স স্টোলেনবার্গ বলেন, ইউক্রেনে ন্যাটোর কোনো সেনা নেই। দেশটিতে কোনো সেনা সদস্য পাঠানোর পরিকল্পনাও নেই আমাদের।
তবে ইউরোপের নিরাপত্তা ইস্যুতে কোনো ছাড় দেয়া হবে না। ন্যাটোভুক্ত কোনো দেশ কিংবা ইইউ’র কোনো দেশে রাশিয়া আগ্রাসন চালালে একবিন্দু ছাড় দেয়া হবে না। এই ইস্যুতে আমরা ঐক্যবদ্ধ।
ধারণা করা হচ্ছে, সীমান্তের কাছে ন্যাটোর শক্তি আর প্রভাব বৃদ্ধি ঠেকাতেই ইউক্রেনে অভিযানের নির্দেশ দিয়েছেন পুতিন। আর কিয়েভে হামলা শুরুর পরপরই, সতর্কতা হিসেবে জরুরি অবস্থা জারি করেছে লিথুয়ানিয়া ও মালডোভা।