বছরের শুরুতেই নিউজিল্যান্ডের মাটিতে মাউন্ট মঙ্গানুই টেস্ট জয় যেন বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের হাতে আত্মবিশ্বাসের চেরাগ তুলে দিয়েছে। সেই আত্মবিশ্বাস এখন ছড়িয়ে পড়েছে ক্রিকেটারদের মধ্যে,
কোচিং স্টাফও এর বাইরে নন। সমর্থকেরাও বিশ্বাস করতে শুরু করেছেন, বিদেশের মাটিতে বাংলাদেশ জিততে পারে। এবার দক্ষিণ আফ্রিকায় ওয়ানডে সিরিজ জয় স্বপ্নের পরিধিটা ছড়িয়ে দিয়েছে আরও বড় জায়গাজুড়ে।
বিদেশের মাটিতে বাংলাদেশ জিততে পারে, এই বিশ্বাসীদের দলে কদিন আগেই যোগ দিয়েছেন অ্যালান ডোনাল্ড। বাংলাদেশ দলের পেস বোলিং কোচের দায়িত্ব নিয়েই যে দক্ষিণ আফ্রিকাকে তাদের মাটিতেই বাংলাদেশের কাছে হারতে দেখেন তিনি। স্বাভাবিকভাবেই টেস্ট সিরিজ জয়ে এখন বাংলাদেশের চোখ।
এই আত্মবিশ্বাস আসছে পেস বোলারদের কারণে। সম্প্রতি বাংলাদেশ দলের পেসারদের পারফরম্যান্সই বিদেশের মাটিতে বাংলাদেশ দলকে স্বস্তিতে রাখছে। আজ ডারবানে বাংলাদেশ দলের অনুশীলনের শুরুতে ডোনাল্ডের কথায় সেই আবহই পাওয়া গেল,
‘দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে তাদের সেরা দলকে হারানোই বলে দেয়, পেসারদের মানসিকতা কেমন। এই অর্জনও যে সম্ভব, সেটা ওরা প্রমাণ করেছে। নিউজিল্যান্ডেও বাংলাদেশের পেসাররা নিজেদের প্রমাণ করেছে। খুব সম্ভাবনা আছে দক্ষিণ আফ্রিকাকেও তাদের মাটিতে হারাবে বাংলাদেশ।’
তবে বাংলাদেশ দলের পেসারদের এই রূপের সঙ্গে আগে কখনো ক্রিকেট–বিশ্ব পরিচিত ছিল না। বাংলাদেশ দলের ম্যাচ জেতানো পারফরম্যান্সগুলো আসত স্পিনারদের হাত ধরেই। ডোনাল্ডও এই নতুন বাংলাদেশকে দেখে অবাক হয়েছেন, ‘আমি অবাক হয়েছি বাংলাদেশি পেসারদের কাছ থেকে দেখে।
ওদের চেষ্টা ভালো লাগছে। ওরা খেলাটাকে কীভাবে খেলতে চায়, এটা দেখে ভালো লাগছে। আর ওরা সবাই খুবই ভালো শ্রোতা। ওরা এখানকার কন্ডিশনের সুবিধাটা ভালোভাবেই নিতে পেরেছে। ওয়ানডেতে খুব আগ্রাসী মেজাজে থেকে ভালো বোলিং করেছে। পরিকল্পনাগুলোও খুব ভালোভাবে মেনেছে।’
টেস্ট সিরিজে বাংলাদেশ দলের পেসাররা হবে প্রোটিয়াদের ভীতির কারণ। ডোনাল্ড সেই সতর্কবার্তাই দিচ্ছিলেন, ‘দেখুন, দক্ষিণ আফ্রিকাকে রাবাদা, নরকিয়া, এনগিডিকে ছাড়া খেলতে হবে। এটা ওদের জন্য চ্যালেঞ্জিং হবে।
তবে ওদের ব্যাকআপ সিমাররাও ভালো করবে। ডুয়াইন অলিভিয়ে পেস আক্রমণের নেতৃত্ব দেবে। ডুপাভিলন হয়তো দলে যোগ দেবে। আমার মনে হয়, টেস্ট সিরিজে খুব হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে।’
বাংলাদেশ দলের পেস বোলিং কোচ ডোনাল্ড দক্ষিণ আফ্রিকার হাঁড়ির খবরও জানেন। বাংলাদেশ দলের দায়িত্ব নেওয়ার আগে ঘরোয়া ক্রিকেটে একটি দলের কোচ ছিলেন তিনি। সাবেক এই প্রোটিয়া কিংবদন্তি ঘরোয়া ক্রিকেটের তরুণ ক্রিকেটারদের ভালোই চেনেন।
আইপিএলের কারণে দক্ষিণ আফ্রিকার মূল দলের আট ক্রিকেটার চলে যাওয়ায় বাংলাদেশ দলের কাদের প্রতি চোখ রাখা উচিত, সেই তথ্যও জানা গেল ডোনাল্ডের কথায়, ‘এটা দারুণ সুযোগ। সুপামলার কথা ধরুন। তাঁর জন্য এটা দারুণ সুযোগ। সে নিউজিল্যান্ডে খেলেছে। অলিভিয়া কী করতে পারে, আমরা সবাই জানি।
ডুপাভিলনের দিকে দৃষ্টি রাখতে পারেন। সে সারা দিন বল করে যেতে পারে। গতিও ১৪০–এর আশপাশে। সে–ও সুযোগটা কাজে লাগাতে চাইবে। আমি দুই বছর ধরে ঘরোয়া ক্রিকেটে এদের দেখছি। ওরা দলে জায়গা পাওয়ার মতোই পারফর্ম করেছে। দুই টেস্ট, ১০ দিনের ক্রিকেট—ভবিষ্যতে দলে জায়গা পাকা করার জন্য এটা দারুণ সুযোগ।’