Home / সর্বশেষ / দলের বিপদের মূহুর্তে আরেকটি গুরুত্বপূর্ন উইকেট তুলে নিলেন এবাদত
Bangladesh's Ebadot Hossain (2R) celebrates with teammates after taking the wicket of India's Virat Kohli (not pictured) during the second one-day international (ODI) cricket match between Bangladesh and India at the Sher-e-Bangla National Cricket Stadium in Dhaka on December 7, 2022. (Photo by Munir uz ZAMAN / AFP) (Photo by MUNIR UZ ZAMAN/AFP via Getty Images)

দলের বিপদের মূহুর্তে আরেকটি গুরুত্বপূর্ন উইকেট তুলে নিলেন এবাদত

অক্ষর প্যাটেলকে নিয়ে দারুণ এক জুটি গড়ে তোলেন স্রেয়াশ আয়ার। ম্যাচটাও যেন বাংলাদেশের হাত থেকে ধীরে ধীরৈ বের করে নিয়ে যাচ্ছিলেন তিনি। কিন্তু মেহেদী হাসান মিরাজ আবারও ত্রাণকর্তার ভূমিকায় অবতীর্ণ। এবার তার বলে ক্যাচ তুলে দিলেন স্রেয়াশ আয়ার। ৮২ রান করে এরই মধ্যে ভয়ঙ্কর হয়ে উঠেছিলেন তিনি।

১০৭ রান করার পর অবশেষে মিরাজের ঘূর্ণিতে ভাঙলো স্রেয়াশ এবং অক্ষর প্যাটেলের জুটি। ৩৫তম ওভারের শেষ বলে মিরাজকে ডিপ মিডউইকেটে আকাশে তুলে মারেন স্রেয়াশ। কিন্তু সেখানে দাঁড়ানো আফিফ অসাধারণ এক ক্যাচ ধরে ফিরিয়ে দেন স্রেয়াশকে।

এ রিপোর্ট লেখার সময় ভারতের রান ৩৭ ওভার শেষে ৫ উইকেট হারিয়ে ১৮৯। ৫৬ রান নিয়ে অক্ষর প্যাটেল। তার সঙ্গী হিসেবে রয়েছেন শার্দুল ঠাকুর।

রোহিত শর্মা ব্যাটিং করতে পারছেন না, বিরাট কোহলিও শুরুতেই বোল্ড। ভারতীয়দের আশা ছিল যা লোকেশ রাহুলকে ঘিরেই; কিন্তু মেহেদী হাসান মিরাজ ব্যাট হাতে ভারতীয় বোলারদের ওপর তাণ্ডব চালানোর পর বল হাতেও চড়াও হলেন। তার বলে ফিরে গেলেন লোকেশ রাহুল। দলীয় ৬৫ রানের মাথায় মিরাজের বলে এলবিডব্লিউর ফাঁদে পড়ে লোকেশ। ২৮ বলে ১৪ রান করেন তিনি।

বিরাট কোহলি আর শিখর ধাওয়ানের উইকেট হারানোর পর এমনিতেই বেশ চাপে পড়ে গেছে ভারত। তারওপর নেই রোহিত শর্মার মত ব্যাটার। স্রেয়াশ আয়ার এবং ওয়াশিংটন সুন্দর মিলে জুটি গড়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু ২৬ রানের জুটি গড়ার পর সাকিব আল হাসানের ঘূর্ণির সামনে টিকতে পারেনি তারাও। ১৯ বলে ১১ রান করার পর সাকিবের বলে লিটন দাসের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যেতে বাধ্য হন ওয়াশিংটন সুন্দর।

বিপদ কাটিয়ে বাংলাদেশ পেয়েছে ২৭১ রানের লড়াকু সংগ্রহ। ভারতীয় অধিনায়ক রোহিত শর্মা চোটে পড়েছেন। তিনি ওপেন করতে নামতে পারেননি।

এর মধ্যে আবার শুরুতেই আবার সফরকারিদের ধাক্কা দিয়েছেন এবাদত হোসেন। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে তিনি বোল্ড করে দিয়েছেন ভারতীয় ব্যাটিংয়ের বড় স্তম্ভ বিরাট কোহলিকে (৫)।

এর আগে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে ৬৯ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে ধুঁকছিল টাইগাররা। ১৯ ওভারও হয়নি তখন। বাংলাদেশের আকাশে ছিল ঘোর অন্ধকার। এই জায়গা থেকে ঘুরে দাঁড়ানো সম্ভব? হয়তো ভাবতে পারেননি কেউই।

তবে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ আর মেহেদি হাসান মিরাজ ভাবলেন। অন্ধকার কাটিয়ে দলকে আলোর পথ দেখালেন এই যুগল। ধ্বংসস্তূপে দাঁড়িয়ে তাদের লড়াকু এক জুটিতে বাংলাদেশ পায় ৭ উইকেটে ২৭১ রানের চ্যালেঞ্জিং সংগ্রহ।

মিরাজ পেয়েছেন ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরি। মাহমুদউল্লাহর হাফসেঞ্চুরি ওয়ানডে ক্যারিয়ারের ২৭তম। সপ্তম উইকেটে তারা ১৬৫ বলে গড়েন ১৪৮ রানের জুটি। যে কোনো উইকেটে যেটি কি না ভারতের বিপক্ষে বাংলাদেশের রেকর্ড।

৪৭তম ওভারে উমরান মালিকের বলে মাহমুদউল্লাহ আউট হন ৭৭ রান করে। ৯৬ বলে গড়া তার দায়িত্বশীল ইনিংসে ছিল ৭ বাউন্ডারির মার। তবে মিরাজকে আটকাতে পারেননি ভারতীয় বোলাররা।

শেষ ওভারে তার সেঞ্চুরির জন্য দরকার ছিল ১৫ রান। শার্দুল ঠাকুরের করা ওভারের দ্বিতীয় আর চতুর্থ বলে ছক্কা হাঁকিয়ে সেঞ্চুরির দ্বারপ্রান্তে চলে আসেন মিরাজ। পঞ্চম বলে ২ আর ইনিংসের একদম শেষ বলে সিঙ্গেলস নিয়ে সেঞ্চুরির উচ্ছ্বাসে ভাসেন এই অলরাউন্ডার।

মিরপুর শেরে বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডেতে টসভাগ্য ছিল বাংলাদেশের পক্ষে। প্রথমে ব্যাটিং করার সিদ্ধান্ত নেন অধিনায়ক লিটন দাস।

লিটনের সঙ্গে আজ ওপেন করেন এনামুল হক বিজয়। শুরুটা ভালোই করেছিলেন। কিন্তু সেই ভালোটা বেশিক্ষণ রইলো না। ৯ বলে ২ বাউন্ডারিতে ১১ রান করা বিজয় জীবন পেয়েও সেটা হেলায় নষ্ট করলেন।

মোহাম্মদ সিরাজের করা ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারের চতুর্থ বলে স্লিপে সহজ ক্যাচ দিয়েছিলেন বিজয়। কিন্তু রোহিত শর্মা সেই ক্যাচ ফেলে দেন। হাতে ব্যথা পেয়ে মাঠ ছাড়েন ভারতীয় অধিনায়ক। পরের বলেই আউট বিজয়।

ওভারের পঞ্চম বলটি বিজয়ের প্যাডে বল লাগলে আবেদন করেন সিরাজ, আম্পায়ারও আঙুল তুলে দেন। অধিনায়ক লিটন দাসের সঙ্গে পরামর্শ করে রিভিউ নিয়েছিলেন টাইগার ওপেনার। কিন্তু রিপ্লেতে দেখা যায়, বল মিডল স্টাম্পে আঘাত হানতো।

এনামুল হক বিজয়ের পর লিটন দাসকেও সাজঘরের পথ দেখান মোহাম্মদ সিরাজ। ভারতীয় এই পেসারের বলে বোল্ড হয়ে ফেরেন বাংলাদেশ অধিনায়ক (২৩ বলে ৭)।

ইনিংসের ১২তম ওভারে উমরান মালিক বল হাতে নিয়েই গতিতে ঝড় তুলেছেন। সাকিব আল হাসানকে বেশ বেগ পেতে হয়েছে তাকে সামলাতে। এক ওভারেই কয়েকবার পরাস্ত হন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার। তবে ওই ওভারটি মেইডেন দিলেও আউট দেননি সাকিব।

এক ওভার পর নাজমুল হোসেন শান্তকে পেয়ে আর উইকেট তুলে নিতে দেরি করেননি উমরান। প্রথম বলেই তিনি ১৫১ কিলোমিটার/ঘণ্টা গতির এক বলে ভেঙে দেন শান্তর স্টাম্প। ৩৫ বলে ৩ বাউন্ডারিতে ২১ রান করে ফেরেন বাঁহাতি এই ব্যাটার।

এরপর সাকিব বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি। ওয়াশিংটন সুন্দরকে স্লগ সুইপ করতে গিয়ে আকাশে ক্যাচ তুলে দেন তিনি। ২০ বলে ৮ রানেই থামে অভিজ্ঞ এই ব্যাটারের ইনিংসটি।

এরপর এক ওভারে জোড়া উইকেট তুলে নেন ওয়াশিংটন সুন্দর। মুশফিক খেলছিলেন বেশ দেখেশুনে। সুন্দরের ঘূর্ণিতে তার প্রতিরোধও ভেঙে যায় ১৯তম ওভারে। মুশফিক ডিফেন্ডই করেছিলেন। বল তার গ্লাভসে লেগে শর্ট লেগ ফিল্ডার ধাওয়ানের হাতে চলে যায়।

২৪ বলে ২ বাউন্ডারিতে মুশফিকের ব্যাট থেকে আসে ১২ রান। সুন্দরের তার ঠিক পরের বলেই আফিফ হোসেন লাইন মিস করে হন বোল্ড (০)।

১৯তম ওভারে ৬৯ রানেই নেই ৬ উইকেট। বাংলাদেশের জন্য বড় লজ্জাই অপেক্ষা করছিল। তবে ধ্বংসস্তূপে দাঁড়িয়ে অবিশ্বাস্য লড়াই করে দলকে বাঁচিয়ে দিয়েছেন অভিজ্ঞ মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ আর আগের ম্যাচের নায়ক মেহেদি হাসান মিরাজ।

ভারতীয় বোলারদের মধ্যে সবচেয়ে সফল ওয়াশিংটন সুন্দর। ৩৭ রানে তিনি নেন ৩টি উইকেট। দুটি করে উইকেট শিকার উমরান মালিক আর মোহাম্মদ সিরাজের।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *