পরাজয় ছিল অনিবার্য। দেখার বিষয় ছিল, বাংলাদেশ দল ইনিংস পরাজয় এড়াতে কি না। কিন্তু সেটিতে আবার বাগড়া দিলো বৃষ্টি।
খেলা শুরুর আগেই বৃষ্টির পেটে চলে গেলো চার ঘণ্টার বেশি। তাই আশা জেগেছিল সেইন্ট লুসিয়া টেস্টটি পঞ্চম দিনে নেওয়ার।
কিন্তু সেটি করতে হলেও শেষ চার উইকেট নিয়ে বাংলাদেশ দলকে ৩৮ ওভার খেলতে হতো। তা সম্ভব হয়নি। তবে নুরুল হাসান সোহানের ৫০ বলে ৬০ রানের সুবাদে ইনিংস পরাজয় এড়িয়ে দশ উইকেটের বড় ব্যবধানে হেরেছে সাকিব আল হাসানের দল।
এই পরাজয়ের মধ্য দিয়ে টেস্ট ক্রিকেটে হারের সেঞ্চুরি করে ফেলেছে টাইগাররা। ২০০০ সালের নভেম্বরে ভারতের বিপক্ষে নিজেদের প্রথম ম্যাচে প্রথম হার।
এবার ২০২২ সালের জুনে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ১৩৪তম ম্যাচে পেতে হলো শততম পরাজয়ের তিক্ত স্বাদ। অর্থাৎ সবমিলিয়ে ১৩৪ ম্যাচের মধ্যে ১০০টিতেই হেরেছে বাংলাদেশ।
জয় মাত্র ১৬ ম্যাচে, ড্র হয়েছে ১৮টি ম্যাচ। যার মানে দাঁড়ায় একটি জয়ের বিপরীতে বাংলাদেশ হেরেছে ছয়টির বেশি ম্যাচ। বিশ্ব ক্রিকেটে জয়-পরাজয়ের অনুপাতে এতো পার্থক্য নেই আর কোনো দলের।
বাংলাদেশের আগেই টেস্টে একশোর বেশি ম্যাচ হেরেছে শীর্ষ আট দল। তবে তারা সবাই খেলেছে তিনশোর বেশি ম্যাচ। প্রতিটি দলেরই জয়-পরাজয়ের মধ্যে রয়েছে ন্যুনতম ভারসাম্য। কিন্তু বাংলাদেশের বেলায় পরাজয়ের মাত্রাই অনেক বেশি।
সেন্ট লুসিয়া টেস্ট ১০ উইকেটে হারের পর অধিনায়ক সাকিব খোলামেলা কথা বলেছেন সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে। জানিয়েছেন, বাংলাদেশ ক্রিকেটে এখনো টেস্টের সংস্কৃতি গড়ে ওঠেনি।
আপাতত দেড় বছরের পরিকল্পনায় সবাইকে নিয়ে বসতে চান সাকিব। যেখানে ঘরের মাঠে জয়কে প্রাধান্য দিয়ে এগিয়ে যাওয়ার ভাবনা তার।
টেস্টে ভালো করার জন্য সাকিবের পূর্ণ পরিকল্পনা তার ভাষাতেই তুলে ধরা হলো- টেস্ট সংস্কৃতিকে দুষছেন সাকিব ক্রিকেটারদের উপরেই যে দোষটা শুধু দিবেন তা নয়, আমাদের দেশের ক্রিকেট সংস্কৃতিটাই এমন। আপনি কবে দেখেছেন ২৫-৩০ হাজার দর্শক (স্টেডিয়ামে) টেস্ট ম্যাচ দেখেছে?
ইংল্যান্ডের তো প্রত্যেক ম্যাচে দেখে। টেস্ট ক্রিকেটের সংস্কৃতিটা আমাদের দেশে আগেও কখনো ছিল না, এখনো নেই। নেই বলে যে হবে না এমনটা না, ওই জিনিসটা পরিবর্তন করা আমাদের বড় দায়িত্ব।
সেটার জন্য একসাথে পরিকল্পনা করে যদি আগানো যায় আমার মনে হয় তাহলে সম্ভব হবে। তা না হলে আগানো সম্ভব হবে না। যেটা বললাম যে, টেস্টের সংস্কৃতিটাই তো নাই। টেস্ট ক্রিকেটকে আমরা যে খুব বেশি আসলে মূল্যায়ন করি সেটা আমি বলবো না।
একটা কারণ হতে পারে যে আমাদের রেজাল্ট ভালো না এজন্য মূল্যায়ন হয় না। একটার সাথে আরেকটার সম্পর্ক আছে। ওই থেকে থেকে আমি বললাম যে দেশে যেন আমরা ভালো খেলি টেস্ট ম্যাচ ধারাবাহিকভাবে।
আপনাকে আগে ঘরে ভালো খেলা নিশ্চিত করতে হবে, তখন আপনি যখন দুইটা অ্যাওয়ে সিরিজ খেলে একটাতে খারাপ করবেন সেটা আসলে চোখে ধরবে না। তো এই কারণে আসলে আমাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ যেন আমরা ঘরের মাঠে ভালো খেলি।